রাজধানী উত্তরা থেকে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) প্রাক্তন দুই ছাত্রকে তুলে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ উঠছে। এ নিয়ে একই বিশ্ববিদ্যালয়ের আরেক প্রাক্তনী শাহ রাজী সিদ্দিকী সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট দিয়েছেন।
যে দুজনকে তুলে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ উঠেছে, তাঁরা হলেন কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের প্রাক্তন ছাত্র হাবিবুর রহমান (স্বপন)। তিনি বর্তমানে একটি মার্কিন প্রতিষ্ঠানে কাজ করেন। অপরজন হলেন স্থাপত্য বিভাগের প্রাক্তন ছাত্র রেজা নূর মুঈন। রেজা দেশের একটি খ্যাতনামা শিল্পপ্রতিষ্ঠানে স্থপতি হিসেবে কাজ করছেন।বিজ্ঞাপন
আজ মঙ্গলবার সকালে শাহ রাজী সিদ্দিকী বলেন, হাবিবুর রহমান তাঁর সঙ্গে উত্তরা ৭ নম্বর সেক্টরে তাঁদের বাসায় থাকেন। স্কুলে পড়ার সময় থেকেই তিনি ও তাঁর পরিবার ঢাকায় হাবিবের স্থানীয় অভিভাবক। গতকাল সোমবার বেলা তিনটার দিকে পুলিশ পরিচয়ে তিনজন হাবিবকে গাড়িতে উঠিয়ে নিয়ে যায়।
রাজী গতকাল রাত নয়টার দিকে জানতে পারেন, হাবিবকে বহনকারী মাইক্রোবাসটি উত্তরা ১৩ নম্বর সেক্টরে আছে। তিনি তাঁর (রাজী) মাকে নিয়ে উত্তরা ১৩ নম্বর সেক্টরে গিয়ে মাইক্রোবাসের বাইরে হাবিব ও রেজাকে দেখতে পান। রেজা তাঁর স্ত্রী ও সন্তান নিয়ে রাজউক-উত্তরা আবাসিক এলাকায় থাকেন।
সেখানে পৌঁছে পুলিশ পরিচয়দানকারীদের কাছে রাজী জানতে চান, এই দুই প্রকৌশলীর বিরুদ্ধে কোনো গ্রেপ্তারি পরোয়ানা আছে কি না। কেন তাঁদের উঠিয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে? এর জবাবে বলেন, তাঁরা সাইবার পুলিশের সদস্য। গ্রেপ্তারে তাঁদের কোনো পরোয়ানা লাগে না। ওই পুলিশ সদস্যরা জানান, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের বিকাশে কিছু টাকা পাঠিয়েছিলেন এই দুজন। সে জন্যই তাঁদের নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।
যাওয়ার সময় ওই পুলিশ সদস্যরা পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) এক কর্মকর্তার কার্ড দিয়ে যান। আজ শাহ রাজী সিদ্দিকী কার্ডে থাকা নম্বর ধরে এক কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলেন। তিনি নিশ্চিত করতে পারেননি কেন ওই দুই প্রাক্তনীকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
শাহ রাজী সিদ্দিকী বলেন, তাঁরা অসমর্থিত সূত্র থেকে খবর পেয়েছেন, ওই দুজনকে সিলেটে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। জালালাবাদ থানায় এর আগে যে ২০০ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে, সেই মামলায় তাঁদের গ্রেপ্তার দেখানো হতে পারে।
শাহ রাজী সিদ্দিকী বলেন, হাবিবের পারিবারিক অবস্থা ভালো নয়। মা-বাবা টাঙ্গাইলে থাকেন। গতকালই জার্মানিতে যাওয়ার ভিসা হয়েছে। সেখানকার একটি সফটওয়্যার কোম্পানিতে চাকরি হয়েছে হাবিবের। অন্যদিকে, রেজার সন্তান খুবই ছোট। তাঁদের এভাবে তুলে নিয়ে যাওয়ার কোনো কারণ খুঁজে পাচ্ছেন না তাঁরা।
সিআইডির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আজাদ রহমান প্রথম আলোকে বলেছেন, সিআইডি কাউকে গ্রেপ্তার করেনি।
নাম না প্রকাশ করার শর্তে সিআইডির অপর একটি সূত্র বলেছে, সিলেটে ওই দুই প্রকৌশলীকে নেওয়া হতে পারে। তবে সিলেটের জালালাবাদ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. আবু খালেদ মামুন বলেন, এই নামে তাঁরা কোনো আসামি গ্রেপ্তার করেননি। এখন পর্যন্ত ওই দুই প্রকৌশলীর নামে কোনো মামলার খবরও তাঁদের কাছে নেই।