বৃহস্পতিবার , ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২২ | ৪ঠা আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
TableTalkUK
  1. ক্রাইম সিন
  2. খেলাধুলা
  3. জেলার খবর
  4. তথ্য-প্রযুক্তি
  5. প্রবাসের কথা
  6. বাংলাদেশ
  7. ব্যাবসা-বাণিজ্য
  8. ভিডিও সংলাপ
  9. মিডিয়া
  10. শিক্ষাঙ্গন
  11. সকল সংবাদ

সাগর-রুনি হত্যার এক দশক

প্রতিবেদক
ukadmin
ফেব্রুয়ারি ১০, ২০২২ ৭:৪৯ অপরাহ্ণ

২ সন্দেহজনকের ডিএনএ-তে আটকে আছে তদন্ত

ঘটনাস্থলে মেলেনি খুনির কোনো আলামত। ক্লু বা সন্দেহের সূত্র মেলেনি স্বজনদের অভিযোগে। ১৬০ স্বাক্ষীর জবানিতে মেলেনি খুনির পরিচয়। সন্দেহভাজন হিসেবে গ্রেপ্তার আটজনের জবানিতেও মেলেনি তাদের সম্পৃক্ততা।

ময়নাতদন্ত, ডিএনএ- সব পরীক্ষায় একই হতাশার চিত্র। শুধু ঘটনাস্থল থেকে জব্দ করা আলামত পরীক্ষায় দুজনের ডিএনএ প্রোফাইল মিলেছে। সাংবাদিক দম্পতি সাগর-রুনি হত্যা মামলার তদন্তে পাঁচ বছর আগে এমন এক অগ্রগতির খবর জানায় তদন্তসংস্থা র‍্যাব। এরপর যুক্তরাস্ট্রের ল্যাবে পরীক্ষায় দুজনকে শনাক্ত করা, এমনকি স্ক্যাচ আঁকার কথাও জানানো হয়।

এভাবেই কেটে গেছে আরো পাঁচ বছর। আজ শুক্রবার চাঞ্চল্যকর সেই হত্যার ১০ বছর। অগ্রগতি সেই দুজনের ডিএনএ সন্দেহ-ই। এর জন্য ৮৫ বার আদালত থেকে সময় নিয়েছে র‍্যাব। সর্বশেষ গত ২৪ জানুয়ারি তদন্ত কর্মকর্তা র্যাবের এডিশনাল এসপি খন্দকার শফিকুল আলমের আবেদনে আগামি ২৩ ফেকব্রুয়ারি প্রতিবেদন জমান নতুন তারিখ দিয়েছেন ঢাকা মহনগর হাকিম তরিকুল ইসলামের আদালত।

এদিকে হত্যার বিচার চেয়ে হতাশায় ডুবেছে সাগর ও রুনির পরিবার। সন্তান হত্যার বিচারের দেখার আগেই গত ৫ জানুয়ারি পৃথিবী থেকে বিদায় নিয়েছেন রুনির মা নুরুন্নাহার মির্জা। রাগর-রুনির মৃত্যুর পর তাদের একমাত্র সন্তান মাহির সরওয়ার মেঘ তার নানির কাছেই থাকত। কিশোর মেঘ তার নানিকে হারিয়ে মুষরে পড়েছে। অসুস্থ সাগরের মাও। তাঁরা বলছেন, দায়িত্বশীল কেউ তদন্তে আন্তরিক- এটা তারা এখন আর মনে করেন না।

অন্যদিকে সহকর্মী খুনের কিনারা না হওয়ায় সাংবাদিক সমাজেও ক্ষোভ বিরাজ করছে। সাগর-রুনি হত্যার বিচার দাবিতে শুক্রবার সকালে ঢাকা রিপোর্টটার্স ইউনিটি (ডিআরইউ) মিলনায়তনে এক প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। রবিবার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে হত্যার বিচার চেয়ে স্মারকলিপি দেবেন ডিআরইউ নেতারা।

২০১২ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি সকালে রাজধানীর পশ্চিম রাজাবাজারের ভাড়া বাসা থেকে বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল মাছরাঙ্গার বার্তা সম্পাদক সাগর সরওয়ার ও এটিএন বাংলার জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক মেহেরুন রুনি রক্তাক্ত লাশ উদ্ধার করা হয়। হত্যাকাণ্ডের সময় ফ্ল্যাটটিতে ছিলো ওই সময় পাঁচ বছরের মেঘ। রুনির ভাই নওশের আলম রোমান বাদি হয়ে শেরেবাংলানগর থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। পরবর্তীতে পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) আদালতে ব্যর্থতা স্বীকার করলে ২০১২ সালের ১৮ এপ্রিল র‍্যাবকে এই মামলার তদন্তভার দেওয়া হয়। তখনকার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাহারা খাতুন বলেছিলেন, ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে আসামিদের গ্রেপ্তার করা হবে। ’

হত্যাকাণ্ডে জড়িত সন্দেহে পুলিশ ও র‍্যাব আটজনকে গ্রেপ্তার করে। তারা হলেন- রফিকুল ইসলাম, বকুল মিয়া, মাসুম মিন্টু, কামরুল হাসান ওরফে অরুন, আবু সাঈদ, সাগর-রুনির বাসার দুজন নিরাপত্তাকর্মী পলাশ রুদ্র পাল ও এনামুল হক এবং সাগর-রুনির পারিবারিক বন্ধু তানভীর রহমানকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরবর্তীতে তানভীর ও পলাশ জামিনে মুক্ত হয়ে কারাগার থেকে বেরিয়ে আসেন। বাকিরা এখনো কারাগারে আছেন।

২০১৫ সালের জুনে আদালতে দেওয়া অগ্রগতি প্রতিবেদনে র‍্যাব জানিয়েছিল, ঘটনাস্থল থেকে জব্দ করা আলামত যুক্তরাষ্ট্রের ল্যাবে পাঠিয়ে ফরেনসিক ও রাসায়নিক পরীক্ষায় দুজন অজ্ঞাত পুরুষের পূর্ণাঙ্গ ডিএনএ প্রোফাইল পাওয়া গেছে। এরপর থেকে তাদের পরিচয় শনাক্তের চেষ্টা চলছে বলে জানানো হচ্ছে আদালতে।

র‍্যাব সূত্র জানায়, যে অজ্ঞাত দুজনের ডিএনএ শনাক্ত হয়েছিল, বর্তমানে তাদের চেহারাও শনাক্ত করার চেষ্টা চলছে। যুক্তরাষ্ট্রের সংশ্নিষ্ট ল্যাবের কাছে র‍্যাবের পক্ষ থেকে ডিএনএ প্রোফাইলের সূত্র ধরে তাদের চেহারা সম্পর্কে জানতে চাওয়া হয়েছে। নতুন একটি প্রযুক্তি দিয়ে ডিএনএ নমুনার সূত্র ধরে সংশ্নিষ্ট ব্যক্তির চেহারা সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যায়। এর মাধ্যমে স্ক্যাচ আকার অপেক্ষা করা হচ্ছে।

জানতে চাইলে ল্যাবের আইন ও গণমাধম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, র‍্যাব মামলাটির তদন্তভার পায় দুই মাস পর। এরপর গুরুত্বপূর্ণ মামলা হিসেবে তদন্তকাজ করছে। ১৬০ জন স্বাক্ষীর বক্তব্য নেওয়া হয়েছে। আটজন আসামিকে বিভিন্ন মেয়াদে রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবা করা হয়েছে। যুক্তদরাষ্ট্রে ডিএনএ নমুনা পরীক্ষা করা হয়। পরবর্তী পরীক্ষায় পাঠানো হয়েছে যা এখন প্রক্রিয়াধীন। চেষ্টা চলছে। এসব ব্যাপারে বিজ্ঞ আদালতকে অবহিত করা হয়েছে। ’

মামলার বাদি রুনির ভাই নওশের আলম রোমান বলেন, ‘এখন কী হচ্ছে আমরা জানি না। গত এক বছর ধরে আমাদের সঙ্গে কোনো যোগাযোগ করা হয়নি। কারো আন্তরিকতা আছে বলে মনে হয়না। তারওপর আমরা বিচার চাই। চেয়ে যাব। আমার আম্মা বিচার চাইতে চাইতে মরে গেলেন। সাগর ভাইর মাও অসুস্থ। ’

রোমান জানান, সাগর-রুনির মৃত্যুর পর মেঘ তাদের বাসায় তার মায়ের কছেই থাকত। তিনিই মেঘকে দেখাশোনা করতেন। রোমানও সময় দিয়ে বড় করছেন ভাগ্নেকে। নানির আদরে মা-বাবার শুন্য ভুলে থাকত মেঘ। এখন নানির মৃত্যুকে সে মুষড়ে পড়েছে। ক্রিকেট খেলায় আগ্রহী মেঘ বয়সভিত্তিক খেলায় অংশ নিচ্ছে। সম্প্রতি সে পঞ্চগড় জেলার অনুর্ধ ১৬ দলের হয়ে একটি সিরাজগঞ্জে ম্যাচে অংশ নেয়। মেঘ কিক্রেটার হওয়ার স্বপ্ন দেখে।  

সর্বশেষ - বাংলাদেশ