ইউক্রেনে রাজধানী কিয়েভ ও অন্যান্য শহরে গতকাল বুধবার রাত থেকে আজ বৃহস্পতিবার সকাল পর্যন্ত একাধিক শক্তিশালী বিস্ফোরণের খবর পাওয়া যাচ্ছে। খবর বিবিসির।
প্রত্যক্ষদর্শীদের ধারণ করা ভিডিও ফুটেজের বরাতে বিবিসি জানাচ্ছে, স্থানীয় সময় বুধবার দিবাগত রাত আনুমানিক তিনটার দিকে অন্তত চারটি শক্তিশালী বিস্ফোরণ হয় কিয়েভে। বিস্ফোরণের পর কিয়েভের রাতের আকাশ আলোকিত হয়ে ওঠে। তবে হামলার লক্ষ্য কী ছিল, কিংবা এতে কতজন হতাহত হয়েছেন, তা জানা যায়নি।
কিয়েভের কেন্দ্রস্থলের একটি রেলস্টেশনের কাছে বড় ধরনের একটি বিস্ফোরণের কয়েক ঘণ্টা পরই এসব বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। রাশিয়ার সেনাদের গোলাবর্ষণ থেকে রক্ষা পেতে রেলস্টেশনটির কাছে কিয়েভের শত শত মানুষ আশ্রয় নিয়েছিলেন। স্টেশনের কাছে শক্তিশালী বিস্ফোরণের পর তাদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।
ইউক্রেনের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক উপদেষ্টা বলেন, আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থা দ্বারা বাধা দেওয়ার পরই একটি ক্ষেপণাস্ত্রের ধ্বংসাবশেষ পড়ে যাওয়ার কারণে সেখানে বেশ কিছু অবকাঠামোর ক্ষতি হয়েছে। কিয়েভের মেয়র ভিতালি ক্লিতিশ্চকো বলেছেন, বিস্ফোরণের ঘটনায় কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি।
থমকে আছে সেই রুশ সেনাবহর
এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা বিভাগের মুখপাত্র জন কিরবি বলেছেন, শত শত সাঁজোয়া যান নিয়ে কিয়েভ অভিমুখে অগ্রসর হওয়া ৪০ মাইল দীর্ঘ রুশ সেনাদের একটি বহর এখন পথেই থমকে রয়েছে। তিনি বলেন, ‘আমাদের ধারণা অনুযায়ী, গত ২৪ থেকে ৩৬ ঘণ্টার মধ্যে তারা তেমন কোনো অগ্রগতি করতে পারেনি।’
জন কিরবি বলেন, রাশিয়ার সেনারা পুনরায় দলবদ্ধ হওয়া ও কতটা অগ্রগতি হওয়ার কথা ছিল, আর কতটা অগ্রগতি করতে হবে, তা মূল্যায়নের জন্য আটকে গেছে বলে মনে হচ্ছে। এ ছাড়া পর্যাপ্ত সামরিক সরঞ্জাম ও দীর্ঘ মেয়াদে যুদ্ধ করার জন্য চ্যালেঞ্জ এবং ইউক্রেনের পক্ষ থেকে প্রতিরোধ গড়ে ওঠার বিষয়টি ভেবে দেখছে।
যাচাই করা হয়নি এমন কিছু প্রতিবেদনের বরাত দিয়ে বিবিসি আরও জানিয়েছে, রাশিয়ার সেনাদের খাবার ও জ্বালানি তেল ফুরিয়ে যাওয়ার দিকে। ইউক্রেনের যেসব এলাকার নিয়ন্ত্রণ রুশ সেনাদের হাতে, সেসব এলাকার কর্মকর্তাদের দাবি, রুশ সেনাদের খাবার মেয়াদোত্তীর্ণ হয়েছে। সুপারমার্কেটে লুট চালাচ্ছেন তাঁরা।
দুই দিন ধরে এই রুশ সাঁজোয়া যানের বহরের কথা শোনা যাচ্ছে। সর্বশেষ জানা যাচ্ছিল, এই বহরটি কিয়েভের মাত্র ১৫ মাইল উত্তর-পশ্চিমে রয়েছে। কিন্তু এখন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে দাবি করা হচ্ছে, রুশ সাঁজোয়া যানের ৪০ মাইল দীর্ঘ এই বহর কিয়েভ যাওয়ার পথে কোনোভাবে আটকে গেছে।