সরকারের নির্বাহী আদেশে কারামুক্ত বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া এবার দুই নাতনির সঙ্গে কুরবানির ঈদ উদযাপন করবেন। এই উদ্দেশে তার প্রয়াত ছেলে আরাফাত রহমান কোকোর দুই কন্যা ঢাকায় অবস্থান করছেন। তারা গুলশানে খালেদা জিয়ার বাসভবনে পৌঁছেছেন।এছাড়া আত্মীয়-স্বজনরা ঈদের দিন তার সঙ্গে দেখা করবেন।
এর আগে কারাবন্দি অবস্থায় থাকা এবং দেশে করোনাভাইরাস পরিস্থিতি কারণে গত কয়েক বছর তিনি ঈদ উদযাপন করতে পারেননি।
সূত্র জানিয়েছে, গুলশানের বাসায় ঈদ করবেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। দুই নাতনি জাফিয়া রহমান ও জাহিয়া রহমানের খালেদা জিয়ার সঙ্গে ঈদ করবেন। ,
খালেদা জিয়ার ছেলের বউ সৈয়দা শর্মিলা রহমান সিঁথি ও ছোট বোন লন্ডনে চলে গেলেও দাদির সঙ্গে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করতে ঢাকায় রয়ে গেছেন নাতনিরা।
বিএনপি সূত্রে জানা গেছে, গত ২৪ জুন হাসপাতাল থেকে খালেদা জিয়াকে বাসায় নিয়ে আসা হলে শাশুড়িকে দেখতে লন্ডন থেকে ঢাকায় আসেন ছোট ছেলের স্ত্রী সৈয়দা শর্মিলা রহমান সিঁথি এবং তার দুই মেয়ে জাফিয়া রহমান ও জাহিয়া রহমান। কয়েকদিন থেকে ৩ জুলাই ঢাকা ছাড়েন শর্মিলা রহমান। দাদির সঙ্গে ঈদ করতে ঢাকায় থেকে যান জাফিয়া রহমান ও জাহিয়া রহমান। আদরের নাতনিদের কাছে পেয়ে মানসিকভাবে অনেকটা চাঙ্গা খালেদা জিয়া।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান এক যুগেরও বেশি সময় ধরে লন্ডনে অবস্থান করছেন। তারেক রহমানের স্ত্রী ডা. জোবাইদা রহমান, কন্যা জাইমা রহমান লন্ডনে।তারা সেখানেই ঈদ করবেন।
নিজের শারীরিক অসুস্থতার কথা উল্লেখ করে খালেদা জিয়ার বোন সেলিনা ইসলাম বলেন, আমি ও আমার স্বামী অসুস্থ। এ কারণে গত কয়েকদিন তাকে (খালেদা জিয়া) দেখতে যেতে পারিনি। সুস্থ থাকলে ঈদের দিন তাকে দেখতে যাব।
তিনি আরও বলেন, এবার নাতনিরা আছে। তাদের সঙ্গে ঈদ করবেন খালেদা জিয়া। ঈদের দিন পারলে আমিও কিছু রান্না করে নিয়ে যাব। শামীম (শামীম এস্কান্দার) তো দেশের বাইরে আছে।
এদিকে বিএনপির স্থায়ী কমিটির অধিকাংশ সদস্যও ঢাকায় ঈদ করবেন। ওইদিন সন্ধ্যার পরে দলীয় চেয়ারপারসনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করার কথা রয়েছে তাদের।
বিএনপির মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান জানিয়েছেন, স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার, মির্জা আব্বাস, নজরুল ইসলাম খান ও বেগম সেলিমা রহমান ঈদের দিন ঢাকায় থাকবেন।তারা দলীয় চেয়ারপারসনের সঙ্গে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করবেন।
ড. আব্দুল মঈন খান জাতিসংঘের একটি সেমিনারে অংশ নিতে যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করছেন। তিনি সেখানেই ঈদ করবেন, ঈদের পর তার ঢাকায় ফেরার কথা রয়েছে।
আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী এরইমধ্যে তার নিজ নির্বাচনী এলাকা চট্টগ্রামে চলে গেছেন। তিনি চট্টগ্রামে ঈদের নামাজ আদায় করবেন। ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু তার নিজ নির্বাচনী এলাকায় ঈদের নামাজ আদায় করবেন এবং সেখানেই কুরবানি দেবেন।
ব্যারিস্টার রফিকুল ইসলাম মিয়া অনেক দিন ধরে অসুস্থ। তিনি বাসায় রয়েছেন তার সুস্থতার জন্য পরিবারের পক্ষ থেকে দোয়া চাওয়া হয়েছে।
মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ঢাকার উত্তরার একটি মসজিদে ঈদের নামাজ আদায় করবেন। ঈদের পরে নিজ নির্বাচনি এলাকা ঠাকুরগাঁও যাওয়ার কথা রয়েছে। তবে, ঈদের নামাজ শেষে বেলা সাড়ে ১১টায় বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের কবর জিয়ারত করবেন দলটির শীর্ষ নেতারা।
স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহ উদ্দিন আহমেদ দীর্ঘদিন ভারতে আছেন। অবৈধ অনুপ্রবেশের দায়ে সেখানে তার বিরুদ্ধে মামলা চলছে। তিনি জামিনে থাকলেও (ভারত) দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা থাকায় তাকে এবারও ভারতে ঈদ করতে হচ্ছে।
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী ঢাকায় ঈদের নামাজ আদায় করবেন।