বৃহস্পতিবার , ২৮ জুলাই ২০২২ | ৬ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
TableTalkUK
  1. ক্রাইম সিন
  2. খেলাধুলা
  3. জেলার খবর
  4. তথ্য-প্রযুক্তি
  5. প্রবাসের কথা
  6. বাংলাদেশ
  7. ব্যাবসা-বাণিজ্য
  8. ভিডিও সংলাপ
  9. মিডিয়া
  10. শিক্ষাঙ্গন
  11. সকল সংবাদ

দেশের হিন্দুরা আ.লীগের বিয়ের দিনের পাগড়ি: ফখরুল

প্রতিবেদক
ukadmin
জুলাই ২৮, ২০২২ ১২:৫৯ অপরাহ্ণ

ঠাকুরগাঁওয়ে রাজবংশী সম্প্রদায়ের এক ছাত্রের একটি উক্তি উদ্ধৃত করে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘এ দেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের লোকেরা হচ্ছেন আওয়ামী লীগের “বিয়ের দিনের পাগড়ি”। পাগড়িটা এক দিনই পরা হয়।’

সম্প্রতি নড়াইলের সাহাপাড়ায় হিন্দু সম্প্রদায়ের বাড়িঘর ভাঙচুর, লুটপাটের বিষয়ে বিএনপির প্রতিনিধিদলের তদন্ত প্রতিবেদন উপস্থাপনের জন্য আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে মির্জা ফখরুল ইসলাম একথা বলেন। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজধানীর গুলশানে দলের চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এ সংবাদ সম্মেলন হয়।

ঠাকুরগাঁও এলাকায় রাজবংশী সম্প্রদায়ের প্রসঙ্গ টেনে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘আমার নিজের নির্বাচনী এলাকায় রাজবংশী সম্প্রদায়ের মানুষ প্রচুর, এক লাখ সাত হাজার ভোটারই আছেন রাজবংশী লোকেরা। তাঁদের মধ্যে একজন আমার ছাত্রই ছিলেন। নাম ছিল অমর রায়। সে খুব চমৎকার একটা কথা বলত বক্তৃতা দেওয়ার সময়ে—আমাদের দেশি ভাষায় ‘হামরা হচ্ছি বিহার দিনের পগরি। মানে, বিয়ের দিনের পাগড়ি হচ্ছি আমরা। একটা দিনই পাগড়িটা পরা হয়, আর কখনো পরা হয় না। নির্বাচনের দিনই ওই পাগড়িটা পরতে হয়, ভোট দেওয়ার সময় নৌকাকে ভোট দিতে হয়। আর বাকিটা সময় আমাদের খোঁজ থাকে না।’

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আসলে বিষয়টা তাও নয়। এখানে আওয়ামী লীগ তাদের মনে করে সংখ্যালঘুরা তাদের সম্পত্তি, তারাই এঁদের রক্ষক, তারা ভোটটোট যা কিছু দেবে, আওয়ামী লীগকে দিতে হবে। আর যা কিছু অত্যাচার-নির্যাতন এবং তাদের সম্পদকে লুট করা, এটাও তাদের।’

সাংবাদিকদের নিরপেক্ষভাবে সংখ্যালঘুদের নির্যাতন, বাড়িঘর, সম্পত্তি দখলের পরিসংখ্যানগুলো দেখার আহ্বান জানান বিএনপির মহাসচিব। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ যখনই সরকারে আসে, তখনই নড়াইলের মতো এ ধরনের সাম্প্রদায়িক ঘটনা বাড়ে এবং হিন্দু সম্প্রদায়ের জমিজমা, বাড়িঘর দখল করে। এমনকি ১৯৭২ থেকে ১৯৭৫ সালের সময়টাতেও তাদের ওপর বেশি অত্যাচার হয়েছে ধর্মের ভিত্তিতে, তাদের জমিজমা দখল করে নিয়েছে।

মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, ‘আওয়ামী লীগের নির্বাচনী প্রচারণা যখন থাকে, তখন তারা বাংলাদেশের হিন্দু সম্প্রদায়ের রক্ষক দাবি করে। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পরে তাদের ওপরই অত্যাচারটা সবচেয়ে বেশি বৃদ্ধি পায়। হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের ওপর ক্রমান্বয়ে এবং ক্রমাগতভাবে অত্যাচার-নির্যাতন বেড়েই চলছে। দেখা যায় যে সম্পূর্ণভাবে তাদের লোকেরাই এ ঘটনাগুলোর সঙ্গে সরাসরি জড়িত।

এ প্রসঙ্গে বান্দরবানের রামু, নাসিরনগর, কুমিল্লা, দিনাজপুর, ঝিনাইদহ, পাবনা, যশোর, অভয়নগর, নাটোর ও নিজের এলাকা ঠাকুরগাঁওয়ে সংখ্যালঘুদের নির্যাতন এবং তাদের বাড়িঘর, উপাসনালয়ে হামলার কথা উল্লেখ করেন।

এ সময় বিএনপির মহাসচিব সদ্য প্রকাশিত জনশুমারিতে হিন্দু সম্প্রদায়ের জনসংখ্যা কমে যাওয়ার কথা উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, আজকে পত্রিকায় এসেছে, এবারের জনশুমারিতে দেখা গেছে, গতবারের (২০১১ সাল) চেয়েও হিন্দু সম্প্রদায়ের জনসংখ্যা কমে গেছে। শতকরা প্রায় এক ভাগের বেশি। হিসাবে দেখা গেছে, প্রায় ৭৫ লাখ।

বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘এটাকে আমরা গুরুত্বের সঙ্গে দেখছি। আমরা মনে করি যে গণতন্ত্র না থাকায় এই ঘটনাগুলো ঘটছে অর্থাৎ বিভিন্ন সম্প্রদায়ের যে অধিকার, সেই অধিকার রক্ষা করা সম্ভব হচ্ছে না। পরিকল্পিতভাবে বিশেষ করে হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষজনকে তাদের গৃহ থেকে, জমি থেকে উচ্ছেদ করে তাদের দেশ থেকে তাড়িয়ে দিয়ে তাদের সম্পদ দখল করা তাদের প্রধান লক্ষ্য হয়ে আছে। গণতন্ত্রের অভাবেই এটা হচ্ছে। সংখ্যায় কম, বিভিন্ন সম্প্রদায়ের লোকদের পরিকল্পিতভাবে উচ্ছেদ করে তাদের দেশ থেকে তাড়িয়ে দিয়ে সম্পদ দখল করাই প্রধান লক্ষ্য বলে আমরা মনে করি।’

সংখ্যালঘুদের বাড়িঘরে হামলার ঘটনাগুলো জনদৃষ্টি ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার চেষ্টা বলেও মন্তব্য করেন মির্জা ফখরুল ইসলাম। তিনি বলেন, এখন গোটা দেশের মানুষ একটাই কথা বলছে যে এ দেশের কোনো নির্বাচন হতে পারে না আওয়ামী লীগ সরকারে থাকলে। এবং নির্বাচন কমিশন নিজে এখন বলতে বাধ্য হচ্ছে যে রাজনৈতিক একটা পরিস্থিতি সৃষ্টি না হলে, সব দলের অংশগ্রহণ না হলে, সে নির্বাচন সুষ্ঠু হবে না। ঠিক এই সময়ে এই দাবিকে পাশ কাটিয়ে দেওয়ার জন্য এটাও একটা কৌশল।

সর্বশেষ - ব্যাবসা-বাণিজ্য