শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল ফেসবুকে ‘কঠোর’ হওয়ার বার্তা দেওয়ার পর অবরোধ প্রত্যাহার করে নিয়েছেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় অচল করে রাখা ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা।
ক্যাম্পাসে অবরোধ শুরুর ৩৫ ঘণ্টা পর মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টায় তা প্রত্যাহারের ঘোষণা দেন কমিটিতে পদবঞ্চিত নেতা-কর্মীরা।
অবরোধ কর্মসূচি প্রত্যাহারের কথা জানিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের শাটল ট্রেনের বগিভিত্তিক সংগঠন বিজয় গ্রুপের নেতা দেলোয়ার হোসেন বলেন, আমাদের আন্দোলনের মূল উদ্দেশ্য ছিল আমাদের নেতা মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল ভাইকে জানানো যে, আমরা পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে পদবঞ্চিত হয়েছি।
চবি ছাত্রলীগের যে অংশ অবরোধ ডেকেছিল, তারা ক্যাম্পাসে মহিবুল হাসান চৌধুরীর অনুসারী হিসেবে পরিচিত।
দেলোয়ার হোসেন বলেন, নেতা বিষয়টি অবগত হয়েছেন, সেটি আমরা জানতে পেরেছি। এখন আমরা পদ-পদবী পাব কিনা, সেটা আমাদের নেতা জানেন। আমরা নেতাকে বিষয়টি জানাতে পারিনি বলেই আন্দোলন করতে বাধ্য হয়েছি।
গত রোববার দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে ক্ষমতাসীন ছাত্রসংগঠনটির কেন্দ্রীয় দপ্তর চবি শাখার ৩৭৬ সদস্যের পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করে।
কমিটি ঘোষণার পরই পদবঞ্চিত নেতা-কর্মীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তত ৪টি হলের প্রায় ৩০টি কক্ষ ভাঙচুর করেন। এদিন রাতেই চবির মূল ফটক আটকে দিয়ে অবরোধের ডাক দেন তাঁরা। বিক্ষুব্ধরা নেতা-কর্মীরা নতুন শাখা কমিটি গঠনের দাবি জানান।
অবরোধ চলাকালে গতকাল সোমবার সকালে ক্যাম্পাসগামী শাটল ট্রেনের চালককে অপহরণ করা হয়। এ কারণে বন্ধ থাকে শাটল ট্রেন। এদিন চলেনি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-কর্মকর্তাদের বহনকারী বাস। তাই গতকাল চবিতে কোনো ক্লাস-পরীক্ষা হয়নি। এ অচলাবস্থা আজও অব্যাহত থাকে।
উপমন্ত্রী ফেসবুক পোস্টে লিখেছেন, ‘ছাত্র সংগঠনের পদপদবির বিষয়ে কোনও দাবি-দাওয়া থাকলে সংগঠনের যেকোনও কর্মী নেতৃবৃন্দের সঙ্গে আলোচনা করতে পারে। কোনও সাংগঠনিক দাবি থাকলে সেটি সংগঠনকে সঙ্গে নিয়ে সমাধান করা যায়। কিন্তু সাংগঠনিক বিষয় নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার পরিবেশ বিনষ্ট করা, ভাঙচুর করা, অপহরণ করা, হত্যার হুমকি দেওয়া কোনোভাবেই ছাত্র সংগঠনের আদর্শ কর্মীর কাজ হতে পারে না।
‘যারা এসব করছে তারা নিজেদের ব্যক্তি স্বার্থেই অরাজকতা করছে। তাদের কাছে সংগঠন বা শিক্ষার মূল্য আছে বলে মনে হয় না। নিজেদের সাংগঠনিক দাবিতে যারা সহিংসতা করছে, তাদের বিষয়ে সংগঠন এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অত্যন্ত কঠোর হওয়া প্রয়োজন।