জনগণের যেকোনো অধিকার আদায়ে মিছিল, মিটিং, সভা-সমাবেশ বা পুলিশের আইন বিধিমালা-২৯ (অ্যাক্ট) কেন সংবিধান পরিপন্থি ও বেআইনি ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট।
রোববার (৩০ অক্টোবর) হাইকোর্টের বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি কাজী মো. ইজারুল হক আকন্দের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
এর আগে বৃহস্পতিবার (২৭ অক্টোবর) মিছিল, মিটিং, সভা-সমাবেশ বা পুলিশের আইন বিধিমালা-২৯ (অ্যাক্ট) চ্যালেঞ্জ করে করা রিটের ওপর শুনানি শেষ হয়। এ বিষয়ে আদেশের জন্যে আজ রোববার দিন ঠিক করেছিলেন হাইকোর্ট।
আদালতে আজ আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী আবদুল মোমেন চৌধুরী। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে ছিলেন প্রধান আইন কর্মকর্তা অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন। তার সঙ্গে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অরবিন্দ কুমার রায়।
এর আগে সমাবেশ বা মিছিল নিষিদ্ধ করার বিষয়ে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনারের ক্ষমতাসংক্রান্ত পুলিশ অধ্যাদেশের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে রিট করা হয়।
রিটে পুলিশের আইন বিধিমালা-২৯-কে সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক বলে অবৈধ ঘোষণা করার নির্দেশনা চাওয়া হয়। একইসঙ্গে রিটে এ অধ্যাদেশের অধীন পুলিশের দায়মুক্তির বিধান এবং ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ রুলস, ২০০৬-এর বৈধতাও চ্যালেঞ্জ করা হয়।
রিটে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ অ্যর্ডিন্যান্স ১৯৭৬-এর সেকশন ২৯ ও ১০৫ এবং ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (সভা, সমাবেশ, মিছিল এবং আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ন্ত্রণ) রুলস ২০০৬-এর বৈধতা চ্যালেঞ্জ করা হয়েছে।
সেকশন ২৯-এ বলা হয়েছে, জনসাধারণের শান্তি বা নিরাপত্তা রক্ষার জন্য পুলিশ কমিশনার যখনই প্রয়োজন মনে করবেন এবং যতদিনের প্রয়োজন বিবেচনা করবেন লিখিত আদেশে জনসমাবেশ বা মিছিল নিষিদ্ধ করতে পারবেন। তবে এ ধরনের কোনো নিষেধাজ্ঞা সরকারের অনুমতি ছাড়া ৩০ দিনের বেশি দেওয়া যাবে না।
সেকশন ১০৫-এ বলা হয়েছে, এ অধ্যাদেশের কোনো বিধান অথবা আপাতত বলবৎ অন্য কোনো আইন বা সে উদ্দেশ্যে প্রণীত কোনো বিধি, প্রবিধান আদেশ বা নির্দেশের অধীন সরল বিশ্বাসে করা কোনো কাজ বা ক্ষতির জন্য কোনো পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করা যাবে না।
সমাবেশের স্বাধীনতা সংক্রান্ত সংবিধানের ৩৭ অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, জনশৃঙ্খলা বা জনস্বাস্থ্যের স্বার্থে আইনের দ্বারা আরোপিত যুক্তিসংগত বাধা-নিষেধ সাপেক্ষে শান্তিপূর্ণভাবে ও নিরস্ত্র অবস্থায় সমবেত হওয়ার এবং জনসভা ও শোভাযাত্রায় যোগদান করার অধিকার প্রত্যেক নাগরিকের থাকবে।
গত ২০ অক্টোবর জনস্বার্থে হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় রিট দায়ের করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী আব্দুল মোমেন চৌধুরী। অন্য রিটকারীরা হলেন- কে এম জাবির, চাঁদুপর বারের আইনজীবী সেলিম আকবর, রাজধানীর বাসিন্দা শাহ নুরুজ্জামান ও মোহাম্মদ ইয়াসিন।
রিটে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব, আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনারসহ সংশ্লিষ্টদের বিবাদী করা হয়।