ভারতের রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ বলেছেন, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা অনুযায়ী প্রগতিশীল, গণতান্ত্রিক বাংলাদেশকে সমর্থন দিয়ে যাবে ভারত। গতকাল শুক্রবার নয়াদিল্লির উদ্দেশে ঢাকা ছেড়ে যাওয়ার আগে সোনারগাঁও হোটেলে এক অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন তিনি। বাংলাদেশে ভারতীয় সম্প্রদায় ও ভারতের বন্ধুদের সম্মানে ওই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
ভারতের রাষ্ট্রপতি বলেন, আজ বাংলাদেশ এই অঞ্চলে প্রবৃদ্ধি ও উন্নয়নের মডেলে পরিণত হয়েছে। একইভাবে বিশ্ববাসীর কাছে প্রমাণিত হয়েছে, বাংলাদেশের জনগণের লড়াই ন্যায়সংগত উদ্দেশে ছিল।
রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘এই লড়াই ছিল মৌলিক গণতান্ত্রিক অধিকারের জন্য এবং বাংলাদেশের অভ্যুদয় ছিল প্রকৃতপক্ষে অধিকারের শক্তির কাছে ক্ষমতাধরের শক্তির পরাজয়।’
রামনাথ কোবিন্দ বলেন, ‘একটি প্রগতিশীল, অন্তর্ভুক্তিমূলক, গণতান্ত্রিক ও সৌহার্দ্যপূর্ণ সমাজের বাংলাদেশের মৌলিক মূল্যবোধ বজায় রাখা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অন্যতম প্রধান অবদান।’
তিনি বলেন, ‘আমি রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে আশ্বস্ত করেছি, স্বাধীনতা আন্দোলন থেকে উদ্ভূত মূল্যবোধের বাংলাদেশকে ভারত সমর্থন দেবে।’
ভারতের রাষ্ট্রপতি বলেন, ভারতীয়দের হৃদয়ে বাংলাদেশের একটি বিশেষ স্থান আছে। আত্মীয়তা, ভাষা ও সংস্কৃতির প্রাচীন বন্ধনের ভিত্তিতে আমাদের সম্পর্ক অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ। দুই দেশের বিচক্ষণ নেতৃত্ব আমাদের সম্পর্ক লালন করেছেন।
বাংলাদেশ-ভারত বন্ধুত্বের এই ঐতিহাসিক ৫০তম বছরে ঢাকায় আসতে পারাকে আনন্দ ও সম্মানের বিষয় বলে জানান রাষ্ট্রপতি কোবিন্দ। গতকাল সকালে ঢাকায় সংস্কার করা ঐতিহাসিক রমনা কালীমন্দির উদ্বোধনের কথাও তিনি জানান। ওই মন্দিরকে ভারত ও বাংলাদেশের মানুষের মধ্যে আধ্যাত্মিক ও সাংস্কৃতিক বন্ধনের প্রতীক হিসেবে উল্লেখ করেন তিনি।ভারতের রাষ্ট্রপতি বলেন, মুক্তিযুদ্ধের পর, বিশেষ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ বড় ধরনের আর্থ-সামাজিক পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। ভারতও প্রশংসনীয় প্রবৃদ্ধির সাক্ষী হয়েছে। আমাদের দুই দেশের জনগণের মধ্যে যে অর্থনৈতিক ও সামাজিক যোগসূত্র তৈরি হয়েছে, তাও অভিন্ন প্রবৃদ্ধি ও উন্নয়নের গল্পে অবদান রেখেছে।
ভারতের রাষ্ট্রপতি বলেন, মুক্তিযুদ্ধের পর, বিশেষ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ বড় ধরনের আর্থ-সামাজিক পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। ভারতও প্রশংসনীয় প্রবৃদ্ধির সাক্ষী হয়েছে। আমাদের দুই দেশের জনগণের মধ্যে যে অর্থনৈতিক ও সামাজিক যোগসূত্র তৈরি হয়েছে, তাও অভিন্ন প্রবৃদ্ধি ও উন্নয়নের গল্পে অবদান রেখেছে।
কোবিন্দ বলেন, ভারত একটি শক্তিশালী অর্থনীতির দিকে বাংলাদেশকে তার যাত্রায় সহায়তা করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। তিনি উভয় দেশের ব্যবসায়ী সম্প্রদায়কে, বিশেষ করে বাংলাদেশ ও ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের মধ্যে বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক সংযোগ বাড়ানোর সুযোগ কাজে লাগাতে অনুরোধ জানান।
ভারতের রাষ্ট্রপতি দুই দেশের তরুণ জনগোষ্ঠীর মধ্যে যোগাযোগ ও বিনিময় এবং সক্ষমতা বৃদ্ধিতে জোর দেন। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ভারতীয় সম্প্রদায় ও ভারতের বন্ধুদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আমি আবারও আশ্বস্ত করছি, ভারত আপনাদের অসাধারণ সদিচ্ছা ও বন্ধুত্বকে মূল্য দেয়। আমরা ঘনিষ্ঠভাবে সংযুক্ত থাকার, যৌথভাবে উন্নয়ন ও সমৃদ্ধি অর্জন এবং আমাদের জনগণের আশা-আকাঙ্ক্ষা পূরণের জন্য উন্মুখ হয়ে আছি।’ তিনি আরো বলেন, ‘১৯৭১ সালে রক্ত ও আত্মত্যাগের বন্ধন ভবিষ্যতেও আমাদের দুই দেশকে একত্রে আবদ্ধ করে রাখবে বলে আমি বিশ্বাস করি।’
তিন দিনের সফর শেষে ভারতের রাষ্ট্রপতি গতকাল দুপুরে নয়াদিল্লির উদ্দেশে ঢাকা ছেড়ে যান। হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ভারতের রাষ্ট্রপতিকে বিদায় জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন।