অবিশ্বাস্য, অবিস্মরনীয়, অভূতপূর্ব ইতিহাস রচনা করলো বাংলাদেশ। নিউজিল্যান্ডের মাটিতে প্রথমবার নিউজিল্যান্ডকে হারিয়ে বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপে প্রথম জয় পেয়েছে বাংলাদেশ।
মাউন্ট মঙ্গানুইয়ের বে ওভালে সিরিজের প্রথম টেস্টে স্বাগতিক নিউজিল্যান্ডকে আট উইকেটে হারিয়েছে টাইগাররা।
সময়ের শিলালিপি ঘষে, পাল্টে দিয়ে সব ইতিহাস, বাংলাদেশের চোখেই হলো কিউই পাখিদের সর্বনাশ। কতো বছরের অপেক্ষা, কতো দীর্ঘশ্বাস, কতো প্রতীক্ষা, সহস্র দিনের আক্ষেপ ঘুচে গেলো নিমিষেই। নেমে এলো সত্য সুন্দর সাবলীল কী এক দৃশ্য, এ যেনো নয়া যুগের মেঘনাদ বধ, দারুণ সময়ের অনবদ্য মহাকাব্য।
১৬ বারের চেষ্টায় এলো এমন দারুণ সফলতা, পরিসংখ্যানের চোখ পাল্টানিও গেলো উল্টে। যেকোনো ফরম্যাটে এবারই প্রথম নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ওদের মাটিতে বাংলাদেশ পেলো জয়, জ্বললো আশার নয়া শলতে।
আগেই থেকেই চালকের আসনে থাকা বাংলাদেশকে চতুর্থ দিনে এগিয়ে নিয়েছিলেন এবাদত, শেষ দিনেও চললো তারই ধারাবাহিক তাণ্ডব। ছয় উইকেট পেয়ে এবাদত গড়লেন অনন্য কীর্তি, ২০১৩ সালের পর এবারই প্রথম এক ইনিংসে পাঁচ উইকেট পেলো কোনো বাংলাদেশি পেইসার। সাথে ম্যাচ সেরাও হয়েছেন এবাদত।
টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের দুই আসরের মধ্যে এবারই প্রথম জয়ের দেখা পেলো বাংলাদেশ, ঘরের মাটিতে ১৭ ম্যাচ পর কিউইদের পরাজয়ের স্বাদ নিতে বাধ্য করার দিনে তাসকিন আহমেদও দাপট দেখিয়েছেন বেশ।
পঞ্চমীতে পাঁচ উইকেট হাতে নিয়ে খেলতে নামা নিউজিল্যান্ড মাউন্ট মঙ্গানুইয়ের সকালে যোগ করতে পারলো মাত্র ২২ রান।
সবমিলিয়ে সহজ লক্ষ্যে খেলতে নামা বাংলাদেশ, শুরুতে উইকেট হারালেও হারের আশঙ্কা একবারও জাগেনি, শেষ পর্যন্ত অভিজ্ঞ মুমিনুল আর মুশফিকের ব্যাটে সহজ হয়েছে জয়, ইতিহাসের পাতায় বাংলার বিপক্ষে এতোদিন অপরাজিত যারা, তাদেরই হলো মহাক্ষয়।
এমন জয়ের আনন্দের বাঁধ ভেঙেছে, জল নড়েছে নানা পাতায়, সাকিব আল হাসানও জানিয়েছেন টুপিখোলা অভিবাদন। বিশ্ব ক্রিকেট অঙ্গনও বাংলাদেশের এমন অর্জনে দিয়েছে শুভেচ্ছা বার্তা, বলেছে এগিয়ে যাও।
পুরো দেশ এমন জয়ে হাওয়ায় ভাসলেও কাপ্তান মুমিনুল নিজেদের পা মাটিতেই রাখছেন, বলেছেন পরের জন্য প্রস্তুতি নিতে হবে তাকাতে হবে ভবিষ্যতের পথে। ইতিহাস ইতিহাসের সাক্ষী হয়েই থাক, সাথে মুমিনুলের কথাই সত্যি হোক, বাংলাদেশ এমন দাপটেই ঘর আর ঘরের বাইরে বিজয় কেতন উড়িয়ে চলুক।