সার্চ কমিটির কাছে নাম দেওয়াকে ‘অর্থহীন’ বলেছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, ‘আমাদের কাছে এগুলোর (সার্চ কমিটিতে নাম দেওয়া) কোনও মূল্য নাই, অর্থহীন।’
নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলগুলোকে আগামী চারদিনের মধ্যে প্রধান নির্বাচন কমিশন ও নির্বাচন কমিশনার পদে নাম প্রস্তাব করতে সার্চ কমিটির সিদ্ধান্তের প্রতি সাংবাদিকরা দৃষ্টি আকর্ষণ করলে বিএনপি মহাসচিব এসব কথা বলেন।
সোমবার (৭ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর বিআরবি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন দলের এক নেতাকে দেখতে গিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘নাম দেওয়ার তো প্রশ্নই উঠতে পারে না। আমরা গতবারের অভিজ্ঞতা এবং এর আগের অভিজ্ঞতা থেকে দেখেছি, এগুলোতে কোনও লাভ হয় না। সরকার যে থাকে, তার যে পছন্দনীয় কমিশন তারা তৈরি করবে, সেটাই তারা তৈরি করে।’
বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বে ছয় সদস্যের সার্চ কমিটির প্রসঙ্গ টেনে মির্জা ফখরুল অভিযোগ করে বলেন, ‘আমরা মনে করি আওয়ামী লীগ নিজেদের ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্যে, আবার ক্ষমতায় যাওয়ার জন্যে যা যা করা দরকার তা-ই করছে। অর্থাৎ তারা আপনার আইনও একটা প্রণয়ন করে নিয়েছে। যেটা সম্পূর্ণভাবে আমরা মনে করি যে জনগণের ইচ্ছার বিরুদ্ধে, জনগণ এটা চায়নি।’
তিনি বলেন, ‘যে সার্চ কমিটি, যেটা বলছেন আপনারা, এটা তো… আমি আগেও বলেছি যে ওল্ড ওয়াইন ইন দ্য নিউ বোটল। গত দুবার যেভাবে করেছে ঠিক একইভাবে আবারও জাস্ট একটা খোলস লাগিয়ে এবং মানুষকে প্রতারণা করা যে আমরা এভাবে করছি, সুন্দরভাবে করছি, দেখো আমরা সকলের মতামত নিচ্ছি, নিয়ে করছি। তারপর দেখা যাবে যে সেই হুদার (কে এম নুরুল হুদা) মতো লোকজনকেই তারা (নির্বাচিত) করবে। এই সার্চ কমিটির মধ্যে আপনারা নিশ্চয় লক্ষ করেছেন যে বেশিরভাগ সদস্যই আওয়ামী লীগের সঙ্গে সম্পৃক্ত। একজন আছেন যিনি আওয়ামী লীগের নমিনেশন চেয়েছিলেন।’
তিনি বলেন, ‘এই ধরনের সার্চ কমিটি তারা যে করবে এটা আমরা আগে থেকে জানতাম। জানি বলে প্রেসিডেন্টের কাছে যাওয়ার ব্যাপারে আমরা না করে দিয়েছি। এখনও বলছি যে এই নির্বাচন কমিশন ও সার্চ কমিটি, যদি সেটা আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে সেটা কখনোই গ্রহণযোগ্য হবে না।’
ফখরুলের মন্তব্য, ‘নির্বাচনই গ্রহণযোগ্য হবে না যদি নির্বাচনকালীন সময়ে আওয়ামী লীগ সরকার থাকে। আমরা মনে করি, নিরপেক্ষ সরকার ছাড়া নির্বাচন সুষ্ঠু হতে পারে না।’
সোমবার বিএনপি মহাসচিব পান্থপথে বিআরবি হাসপাতালে নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলার সভাপতি ও সাবেক উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল আজিজকে দেখতে যান। গত ৪ ফেব্রুয়ারি গুরুদাসপুরে সন্ত্রাসীদের হামলায় আজিজ গুরুতর আহত হন বলে জানিয়েছে বিএনপি। পরে ঢাকায় নিয়ে এসে এই হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তার সর্বশেষ অবস্থা চিকিৎসকদের কাছ থেকে অবহিত হন বিএনপি মহাসচিব।
এই সময় দলের সাংগঠনিক সম্পাদক রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলুসহ নাটোরের স্থানীয় বিএনপি, স্বেচ্ছাসেবক দল, ছাত্রদল নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
গুমের বিষয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী যে বক্তব্য দিয়েছেন তার সমালোচনা করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘এটা হাস্যকর শুধু নয়, অত্যন্ত দুঃখজনক। কারণ, যাদের সন্তান গেছে, যার স্বামী গেছে, যাদের পরিজন গেছে; বাংলাদেশের মানুষ জানে তাদের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তুলে নিয়ে গিয়েছিল। এই সরকার তো এখন পর্যন্ত জবাব দেয়নি।’