সরকারের সঙ্গে আছে এমন ‘দুর্নীতিবাজ’দের বিরুদ্ধে তদন্তের জন্য দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) চিঠি দেবে বিএনপি। এতে দুর্নীতির সুনির্দিষ্ট তথ্য দিয়ে বেশ কয়েকজনের নাম উল্লেখ করে তাদের ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য দাবি জানানো হবে।
ইতোমধ্যে এ সংক্রান্ত একটি চিঠির খসড়া তৈরি হয়েছে। শিগগিরই তা দুদকে পাঠানো হবে। এ নিয়ে সোমবার স্থায়ী কমিটির বৈঠকেও বিস্তারিত আলোচনা হয়। এছাড়া ওই বৈঠকে ২৭ মার্চ চট্টগ্রামে মহাসমাবেশ এবং দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির প্রতিবাদে আবারও কর্মসূচি দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে এসব তথ্য।
দুদককে চিঠির বিষয়ে জানতে চাইলে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, এ সম্পর্কে তিনি কিছু জানেন না। তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দুই নীতিনির্ধারক চিঠির বিষয়টি নিশ্চিত করে যুগান্তরকে বলেন, ইতোমধ্যে খসড়াও তৈরি হয়েছে। দেশে স্বাস্থ্য, শিক্ষা, বাণিজ্যসহ বেশ কয়েকটি খাতে চরম দুর্নীতি হচ্ছে। অবকাঠামো উন্নয়নের নামে নানা দুর্নীতির খবরও প্রকাশ পাচ্ছে।
এছাড়া সম্প্রতি আইনমন্ত্রী ও একজন উপদেষ্টার ফোনালাপ ফাঁস হয়েছে-যাতে এ সরকারের দুর্নীতির প্রকৃত চিত্র স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। গত মাসে অনুষ্ঠিত দলের এক স্থায়ী কমিটির সভা থেকে এই ফোনালাপ ফাঁস হওয়ার বিষয়ে শুধু তদন্ত নয়, বিষয়বস্তু সম্পর্কে নিরপেক্ষ তদন্তের দাবি জানানো হয়। বিষয়টি তদন্তসহ কয়েকজনের নামের তালিকা বিএনপির পক্ষ থেকে দুদককে দেওয়া হবে। পাশাপাশি নানা খাতে যারা দুর্নীতি করছেন তাদের বিরুদ্ধে তদন্তের দাবি জানানো হবে।
সোমবার রাতে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সভাপতিত্বে স্থায়ী কমিটির ভার্চুয়াল সভা হয়। এতে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ স্থায়ী কমিটির সদস্যরা অংশ নেন।
একটি সূত্র জানিয়েছে, সম্প্রতি ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের করোনা পজিটিভ হয়। যে কারণে গত বেশ কয়েকটি সভার তারিখ পরিবর্তন হয়েছে। পরে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের করোনা নেগেটিভ হলে স্থায়ী কমিটির সভা প্রতি সপ্তাহের সোমবারে হচ্ছে। গত স্থায়ী কমিটির সভায় দুদককে চিঠি দেওয়ার বিষয় নিয়েই দীর্ঘ সময় আলোচনা হয়। যেসব ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে চিঠিতে উল্লেখ থাকবে তাদের ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট তথ্য থাকার বিষয়টি গুরুত্ব দেন নেতারা।
এছাড়াও দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির প্রতিবাদে আরও কর্মসূচি দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। সারা দেশে গণঅনশনসহ কয়েক দিনের কর্মসূচি ঘোষণার কথা রয়েছে। শিগগিরই সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যেমে এ কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে। একই দাবিতে বিএনপি ও এর অঙ্গ-সহযোগী সংগঠন সারা দেশে বিক্ষোভ সমাবেশ এবং ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড পর্যায়ে হাটবাজারে হাটসভা, পথসভা ও লিফলেট বিতরণের ১১ দিনের কর্মসূচি পালন করেছে, যা মঙ্গলবার শেষ হয়।
২৭ মার্চ চট্টগ্রামে মহাসমাবেশ : এদিকে ২৭ মার্চ চট্টগ্রামে মহাসমাবেশ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএনপি। স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন দলটির জাতীয় কমিটির উদ্যোগে এই সমাবেশ হবে। এতে বিপুলসংখ্যক লোকসমাগমের প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। সমাবেশে মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ স্থায়ী কমিটির সদস্য ও বীর মুক্তিযোদ্ধারা উপস্থিত থাকবেন।
জানতে চাইলে জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দলের কেন্দ্রীয় সভাপতি ইশতিয়াক আজিজ উলফাত বলেন, ২৭ মার্চ চট্টগ্রামের কালুরঘাটে বিশাল সমাবেশ করব। কালুরঘাট থেকেই শহিদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছিলেন। সে ডাকে আমরা যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলাম। ওই দিনটিকে স্মরণীয় করতে আমরা এ কর্মসূচি হাতে নিয়েছি। ওই সমাবেশ থেকে দেশের স্বাধীনতা ও গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার ডাক আসবে।