ছাত্রলীগের কর্মসূচিতে না যাওয়ায় শিক্ষার্থীদের আবাসিক হলের কক্ষ থেকে বের করে দেওয়ার হুমকির অভিযোগ উঠেছে ইডেন কলেজ ছাত্রলীগ সভাপতি তামান্না জেসমিন রিভার বিরুদ্ধে। এ সংক্রান্ত একটি অডিও ফাঁস হয়েছে।
অডিওতে ইডেন কলেজ ছাত্রলীগ সভাপতিকে বলতে শোনা যায়-‘বেশি চ্যাটাং চ্যাটাং করতেছোস। এক পায়ে পাড়া দিমু, আরেক পা টাইনা ধইরা ছিঁড়া ফেলমু। ৪ মাস হয়ে গেছে ফাইজলামি শুরু করছিস।’
ঘটনাটি ঘটেছে ইডেন কলেজের রাজিয়া হলে। অডিওতে রিভাকে বলতে শোনা যাচ্ছে-‘তোরা লিগ্যাল তাতে আমার গেছে। কোন হেডাম দেখাইতে আসিস তোরা। আমার পলিটিক্যাল রুমে তোরা লিগ্যাল থাকবি কি-না, সেটা তোদের বিষয়। কে কে টাকা জমা দিছিস? আমারে দিছিস? আর কে লিগ্যাল?’
এ সময় পাশ থেকে একজনকে বলতে শোনা যায়-‘ও তো অসুস্থ, বাসায় গেছে?’ জবাবে ইডেন কলেজ ছাত্রলীগ সভাপতি বলেন-‘২০২ (রুম নম্বর)-এ আর লিগ্যাল কে? তোরা লিগ্যাল তাতে আমার কি গেছে? বল? আমি কি তোদের। চ্যাটাং চ্যাটাং করতেছোস। এক পায়ে পাড়া দিমু, আরেক পা টাইনা ধইরা ছিঁড়া ফেলমু। চার মাস হয়ে গেছে ফাইজলামি শুরু করছিস।’
এ সময় সুমনা মীর নামে এক মেয়েকেও গালাগাল করতে শোনা যায় ইডেন কলেজ ছাত্রলীগ সভাপতিকে। তিনি বলেন, ‘বুঝিস না, পলিটিক্যাল রুমে থাকিস। তোদের লিগ্যাল করাইছে, তাতে আমার কি? আমি যদি একটা সিট না দেই, ২০২ থেকে তোদের কোন বাপ সিট দেবে? ম্যাডামরা দেবে? ক্ষমতা আছে ম্যাডামদের?’
‘ম্যাডামদের ক্ষমতা আছে, আমাদের রুম থেকে একটা মেয়েকে বের করার? ইডেন কলেজের প্রিন্সিপালেরও ক্ষমতা নেই, এ রুম থেকে একটা মেয়েকে বের করার। একদম গলায় পাড়া দিয়ে ধরতে ইচ্ছা করতেছে। আগামী এক ঘণ্টার মধ্যে যে রুমে বলবো, সে রুমে যাবি। আমার সঙ্গে হ্যাডাম দেখাইতে আসে!’
ইডেন কলেজ প্রশাসনকে চ্যালেঞ্জ করে ছাত্রলীগ নেত্রী রিভাকে আরও বলতে শোনা যায়-‘একটা সিঙ্গেল মেয়ে যদি ওই রুমে এসে কন্ট্রোল করতে চায়, সে হোক নেত্রী, ইডেন কলেজের প্রিন্সিপাল ম্যামও কোনো মেয়ে দিতে পারবে না। এটুকু সেন্স থাকা উচিত ছিল। রুমটা যেহেতু ইডেন কলেজের প্রেসিডেন্ট নিয়ে নিছে, ইডেন কলেজের প্রেসিডেন্টের ওপরে আর কেউ নাই।’
অডিওর বিষয়ে জানতে ইডেন কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি তামান্না জেসমিন রিভাকে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি তা রিসিভ করেননি।
ভুক্তভোগী ছাত্রীরা বলেন, আমরা এখানে লিগ্যাল রুমে থাকি। ছাত্রলীগের প্রোগ্রাম না করায় ইডেন কলেজ ছাত্রলীগ সভাপতি আমাদের বের হয়ে যেতে বলেন। না গেলে দেখে নেওয়ার হুমকিও দেন। অডিও রেকর্ডের বিষয়ে জানতে চাইলে রাজিয়া হলের প্রাধ্যক্ষ বলেন, ‘আমি রেকর্ডটি শুনিনি। লিখিত কোনো অভিযোগও পাইনি। যদি এরকম ঘটনা ঘটে থাকে আর কেউ যদি আমাদের কাছে লিখিত অভিযোগ দেয় তাহলে আমরা ব্যবস্থা নেব।