প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের পরামর্শে র্যাব সৃষ্টি হয়েছে এবং তারা যেমন প্রশিক্ষণ দিয়েছে, র্যাব সেভাবেই কাজ করেছে।
বৃহস্পতিবার বিকালে প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি পালটা এ প্রশ্ন তুলেন। জাতিসংঘে সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে যোগদানসহ যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য সফর সম্পর্কে জানাতে এই সংবাদ সম্মেলনে আসেন সরকারপ্রধান।
শুরুতেই প্রধানমন্ত্রী তার সফরের অভিজ্ঞতা নিয়ে লিখিত বক্তব্য পড়ে শোনান। পরে প্রশ্নোত্তর পর্বে এক সাংবাদিক জানতে চান, র্যাবের সাবেক ও বর্তমান কর্মকর্তা এবং সংস্থাটির বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের স্যাংশন (নিষেধাজ্ঞা) দেওয়ায় দেশটির সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্কে এরকম টানাপোড়েন চলছে। এই সম্পর্ক নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর মূল্যায়ন কী, কীভাবে দেখছেন?
জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, র্যাব কাদের তৈরি? র্যাব তো তারাই (যুক্তরাষ্ট্রে) তৈরি করেছে।তারা ট্রেনিং, অস্ত্র, প্রযুক্তি- সবকিছু দিচ্ছে।তাহলে যেই সংস্থাটি (র্যাব) বাংলাদেশের সন্ত্রাস নির্মূল করল, তাদের বিরুদ্ধে কেন স্যাংশন? তাহলে কি তারা (যুক্তরাষ্ট্র) বাংলাদেশে সন্ত্রাস না থাকায় নাখোশ- আমার সেই প্রশ্ন। আমি এসব বিষয়ে জাতিসংঘের অধিবেশনের ভাষণে বলেছি।
তিনি বলেন, রাষ্ট্রে রাষ্ট্রে সংঘর্ষ থাকতে পারে। যুক্তরাষ্ট্র সময়ে সময়ে আমাদের ওপর স্যাংশন, নিষেধাজ্ঞা দিয়ে থাকে। কিন্তু দুর্ভাগ্যের বিষয় আমাদের দেশের কিছু লোক যারা অপকর্ম করে দেশ ছেড়েছে, তারা বানোয়াট, মিথ্যা কথা বলে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালায়।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, র্যাবের ওপর স্যাংশন দিল, আমি প্রশ্ন করব র্যাব সৃষ্টি করল কে? র্যাব সৃষ্টি তো যুক্তরাষ্ট্রের পরামর্শেই। যুক্তরাষ্ট্রই র্যাব সৃষ্টি করতে পরামর্শ দিয়েছে, তারাই ট্রেইনিং দিয়েছে, অস্ত্র দিয়েছে এমনকি ডিজিটাল সিকিউরিটি সিস্টেম সবই যুক্তরাষ্ট্রের দেওয়া। এখন যুক্তরাষ্ট্র যদি স্যাংশন দেয় বা কোনো কথা বলে বা অভিযোগ আনে, তখন একটাই কথা, যেমন আপনারা ট্রেনিং দিয়েছেন তেমন তারা কার্যকর করেছে। এখানে আমাদের করার কী আছে? আপনাদের ট্রেনিং যদি একটু ভালো হতো, তাহলে একটা কথা ছিল।
বাংলাদেশে আইন শৃঙ্খলাবাহিনী অপরাধ করলে বিচার হয়, যুক্তরাষ্ট্রে হয় না বলেও এ সময় মন্তব্য করেন প্রধানমন্ত্রী।
তিনি আরও বলেন, আমাদের দেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থা র্যাবই হোক বা পুলিশই হোক, তারা যদি কোনো অপরাধ করে তাদের বিচার হয়। যুক্তরাষ্ট্রে কিন্তু পুলিশ সরাসরি গুলি করে মারলেও বিচার হয় না। সেখানে যখন জনগণ আন্দোলনে নামল, তখন একটা বিচারই বোধ হয় তারা সারা জীবনে করতে পেরেছে। আমাদের কতজন বাঙালি মারা গেছে। সেখানে কিন্তু তারা কিছু বলেনি। আমি এসব কথা তাদের স্পষ্ট বলেছি। আমি কিন্তু বসে থাকিনি।